বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

গৌরীপুরের পল্লীতে পুলিশের উপস্থিতিতে মধ্য যুগীয় কায়দায় চলছে বাড়ী-ঘরে আগুন, গরু-ছাগল, মালামাল লুটপাট আর মারপিট

  1. কমল সরকার,গৌরীপুর।।
  2. ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের বালুচড়া,স্বল্প পশ্চিম পাড়া,মিরাকান্দাসহ ৫টি গ্রামে গত ৫দিন যাবত চলছে নিরীহ মানুষের বাড়ী-ঘরে হামলা,ভাংচুর গৃহপালিত পশু থেকে শুরু করে মালামাল লুটপাট,অগ্নি সংযোগ মারপিট। উল্লেখিত ইউনিয়নের বালুচরা গ্রামের সাহেদ আলী ও স্বল্প পশ্চিমপাড়া গ্রামের মোস্তাকিম মেম্বার বাহিনীর মাঝে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্রমাগত সংঘর্ষের ঘটনায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা থেকে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বর্তমানে পুলিশের সহযোগিতায় হামলা লুটপাটের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেছে বালুচরা গ্রামবাসী।  জানা গেছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারী রাতে বালুচরা গ্রামের শাহেদ বাহিনীর প্রধান শাহেদ আলী উপজেলা সদর থেকে বাড়ী যাবার পথে নয়াপাড়া নামকস্থানে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়। সেখান থেকে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে গৌরীপুর হাসপাতালে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে এলাকাবাসী।এই খবরে শাহেদ বাহিনীর সেকেন্ড ইন-কমান্ড  সাহেদ আলীর ২ ছেলে স্বপন-নয়নের নেতৃত্বে প্রায় তিন শতাধিক লোকজন প্রতিপক্ষ মোস্তাকিম মেম্বারের বাড়ী-ঘরসহ তার আত্মীয় স্বজনের প্রায় ১৪টির মত ঘর-বাড়ী ভাংচুর গরু-মহিষ,ধান-চাল ও অন্যান্য মালামাল লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে গৌরীপুর থানার পুলিশ ঘটনা স্থলে ছুটে গিয়ে ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। অবস্থার প্রেক্ষিতে ঘটনার পর থেকে সেখানে অতিরিক্ত ১ প্লাটন দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ব্যপারে মোস্তাকিম বাহিনী থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিকৃত শাহেদ বাহিনীর প্রধান শাহেদ আলীকে (১৮ ফেব্রুয়ারী) মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করেছে। এদিকে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মেতায়েন করা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশের  ভুমিকা রহস্য জনক বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ পুলিশ বাহিনীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মোস্তাকিম মেম্বার বাহিনী শাহেদ বাহিনীর আত্বীয় স্বজন ও তার পরিবারের জান-মালসহ এলাকার নিরীহ লোকজনের উপর ক্রমাগত হামলা,লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। এই বাহিনী এ যাবত ৮জন নিরীহ গ্রামবাসীকে বেধরক পিঠিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। যারা মোন্তাকিম বাহিনীর বশ্যতা স্বীকার করছে না তাদের শাহেদ বাহিনীর লোক সাঁজিয়ে মারধোর করে পুলিশে সোপর্দ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লুটে নিচ্ছে গুরু-ছাগল,ধান-চাল ঘরের অন্যান্য মালামাল। ( ২০ ফেব্রুয়ারী ) বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশকে সাথে নিয়ে মোন্তাকিম মেম্বার বাহিনী বালুচরা গ্রামে পুনরায় হামলা চালায়। এ সময় হামলা কারীরা শাহেদ আলীর বড় ছেলে নয়নকে ধাওয়া করে ধরে বেধরক পিঠিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাকে গুরুতর আহত  অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত নয়নের ভাই স্বপন অভিযোগ করেছে মোস্তাকিম বাহিনী পুলিশের সহযোগিতায় তার ভাইকে ধরে পিঠিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে। এ সময় মোস্তাকিম বাহিনী বালুচরা গ্রামের বাবুল মিয়ার ২টি, শাহেদ আলীর ২টি,ছাবেদ আলীর ২টি,আফিল উদ্দিনের ৩টি গরু লুট করে নিয়ে যায়। এদিকে পুলিশ উভয় পক্ষের লুটকৃত ৬টি গরু উদ্ধার করে মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিলেও এখনও লুট হওয়া  অসংখ্য গরু-ছাগলের কোন হদিস নেই। ভুক্তভোগী শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসী এলাকার শান্তি-শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে উর্ধোতন কর্তৃপক্ষের তরিৎ হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। এ ব্যপারে  থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মাঈনউদ্দিন বলেছেন,  ২টি গ্রামের বিস্তৃর্ন এলাকা জুড়ে  ঘটনা ঘটছে, পুলিশ একদিকে থাকলে অন্য দিকে ঘটনা ঘটে যায়। তবে এই মুহুর্তে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন