রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

গৌরীপুরে পুরনো বাটকারা-কাঠ বাঁশের দাঁড়ি-পাল্লা’র যথেচ্ছা ব্যবহার ।। ওজন কারচুপিতে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ

  •  
  • কমল সরকার,গৌরীপুর ।।
    ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ওজন কারচুপিতে প্রতিনিয়ত  প্রতারনার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ধান-চাল থেকে শুরু করে শাক-সবজি মাছ-মাংস,ভোজ্যতৈল,দুধ,পেট্রোল,কেরোসিনসহ সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বেচা-কেনায় পরিমাপে দেদারছে ওজন কারচুপি চলছে। জানা গেছে ওয়ান লেভেনের সময় সেনাবাহিনীর অভিযানে দোকান-পাঠের নানাবিধ দ্রব্যাদী পরিমাপের জন্য কাঠ-বাঁশ দিয়ে তৈরী করা দাঁড়ি পালস্না,তরল পদার্থ বিক্রির গ্যালন পট ও পুরনো বাটকারা ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের জরিমানা করার পর ব্যবসায়ীরা ভয়ে সঠিক মাপের বাটকারা (পরিমাপক), লোহার নিক্তি পাল্লা  ও তরল পদার্থ বিক্রির লিটার পট ব্যবহার  শুরু করে। কিন্তু সেনাবাহিনীর অভিযানের কিছুদিন পর থেকেই আবার শুরু হয় ওজন পরিমাপের জন্য পুরনো বাটকারা, রেল লাইনের পাথর আর কাঠ-বাঁশের তৈরী দাঁড়ি পাল্লা  পুরনো পদ্ধতির গ্যালন পট ব্যবহার। পাশাপাশি চলে ওজনে কারচুপি করার প্রবনতা।  এক্ষেতে ডিজিটাল ওজন পরিমাপকের মাঝেও রয়েছে ওজন কারচুপির সুকৌশল ব্যবস্থা। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে  ধানের আরতে ধান কেনা-বেচার এক্ষেতে দু’রকমের বাটকারা ব্যবহার হয়ে থাকে। বিক্রেতাদের অভিযোগে জানা গেছে কতিপয় অসাধু  ব্যবসায়ী ধান কেনার সময় নিজেদের তৈরী করা বেশী ওজনের বাটকারা ব্যবহার করে থাকেন। সেখানে ৫/১০ কেজি ওজনের বাটকারার খালি গর্তে  শিশা ভরাট  করে  সুক্ষভাবে ওজন বৃদ্ধি করা হয়। তাছাড়া (গোখাদ্য) ৩৭ কেজি খৈইল ভুসির বস্তা খুলে তা থেকে ৫/৬ কেজি ভুসি বা খৈইল রেখে দিয়ে নতুন করে সেলাই করা বস্তা ,ইউরিয়া ও নন ইউরিয়া ৫০ কেজির   সারের ইনটেক বস্তা থেকে (গোঙ্গা মেরে) বিশেষ পদ্ধতিতে  ৫/৬ কেজি সার রেখে দিয়ে একই দরে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।  যা বিক্রেতা সহজে ধরতে পারে না। সবজি মাছ-মাংসের বাজারে পুরনো আমলের বাটকারা  ও কাঠ-বাঁশের তৈরী দাঁড়ি পাল্লা দিয়ে পরিমাপ করায় ক্রেতা সাধারণ ওজন কারচুপির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। উপজেলার কোনাপাড়া গ্রামের শহর আলী  ২শ টাকা কেজি দরে আধাকেজি শুকনো মরিচ ক্রয় করার পর অন্যত্র এর ওজন করে দেখেন ১শ গ্রাম মরিচ কম রয়েছে। আড়াইশ টাকা কেজি দরের হলুদ গুড়া কিনে ৫০ গ্রাম ওজনে কম পেয়েছেন ভালুকার ছাবেদ আলী । এক সেনাবাহিনীর সদস্য সাড়ে ৪শ টাকা দরের ২ কেজি খাসির মাংস কিনে ওজনে কম পেয়েছেন সাড়ে ৩শ গ্রাম। ভুসির ইনটেক বস্তা কিনে ওজনে প্রতারিত হয়েছেন মাছুয়া কান্দা গ্রামের দুধ ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল। প্রতিনিয়িত এমনি ভাবে সকল প্রকার তৈজস পত্র থেকে শুরু করে কাঁচা বাজারে পেয়াজ আলু, মাছ শাকসবজি কিনে কেজিতে ১শ ২শ গ্রাম  থেকে ৪শ গ্রাম পর্যন্ত কম পাচ্ছে সাধারণ ক্রেতা। এক্ষেতে অভিনব কায়দায় ওজন কারচুপি,পুরনো বাটকারা আর কাঠ-বাঁশের দাঁড়ি পালস্নার ব্যবহার রোধে বাজারে কোন তদারকি বা অভিযান না থাকায় এলাকার হাট বাজারে পুরনো বাটকারা ব্যবহার ও ওজন কারচুপির বিষয়টি দিন দিন ব্যপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে অভিযোগ পাওয়া গেছে ডিজিটাল ওজন পরিমাপক মেশিনে মাইনাস বাটন  টিপে  নাকি দই,মিষ্টি থেকে দামী বিভিন্ন খাবার সামগ্রী বিক্রিতে ওজনে কারচুপি করে থাকেন কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।  তাই অনতিবিলম্বে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষনে বাজারে সঠিক ওজন পরিমাপক পরিবেশ সুষ্টি করতে সংশিস্নষ্ট বিভাগের একটি জোড়ালো আইনি অভিযান পরিচালনা করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন