শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৪

গৌরীপুরে বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং ।। চৈত্রের তাপদাহে দুর্বিসহ জনজীবন

কমল সরকার,গৌরীপুর ।।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় নজিরবিহীন লোডশেডিংয়ের কারণে চৈত্রের প্রচন্ডতাপ দাহে জনজীবন বিপর্যস্থসহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে এ উপজেলার বিদ্যুৎ নির্ভর ছোট-বড় শিল্প কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ছাড়া বিদ্যুতের কারণে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে চলতি এইচ এসসি পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়া। সরকারী হিসেব মতে সারা দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকেলেও গৌরীপুরে প্রতি আধ ঘন্টা পর পর বিদ্যুত বিভ্রাটের পাশপাশি ২/৩ ঘন্টা পর পর বিদ্যুতর লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিনিয়ত ট্রান্সফরমার বিকল,তার ছিঁড়ে যাওয়াসহ নানা বাহানায় ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুত বিহীন থাকছে গৌরীপুর উপজেলা। তাছাড়া ফটোষ্ট্যাট,লেমোনিটিং, ফ্যাক্্র ও কম্পিউটার কম্পোজসহ বিদ্যুৎ নির্ভর ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ,ওযার্কসপগুলোর মালিক দিরভর বিদ্যুতের লোডশিডিংয়ের কারনে ব্যবসায় মার খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অপরিহার্য্য অংশ হচ্ছে বিদ্যুৎ। নাগরিক জীবনের দৈনন্দিন প্রতিটি কাজেই বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আর সেই বিদ্যুৎ ময়মনসিংহের গৌরীপুরে এখন আর যায় না, মাঝে মাঝে আসে। প্রতিনিয়ত ১০ থেকে ১৫ ঘন্টা লোডশেডিং জুটছে গৌরীপুরবাসীর ভাগ্যে। ময়মনসিংহ-৩, গৌরীপুর আসন থেকে ৩ বার নির্বাচিত  ডা. ক্যাপ্টেন (অব:) মজিবুর রহমান ফকির এমপি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে এলাকাবাসী সে সময়ে সন্তোসজনক বিদ্যুত সুবিধা পেয়েছে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি যেন সম্পূর্ণ উল্টো। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসে কিন্তু কখন যায় তা নিরুপন করা যায় না। বিদ্যুতের অভাবে ৩ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তীব্র গরমে লেখা-পড়া করতে হচ্ছে মোমবাতি জ্বালিয়ে। এ ক্ষেত্রে থেমে গেছে গৌরীপুরের মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোতে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেক ছাত্র-ছাত্রী। রাতে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা। বাড়ছে নানান অসামাজিক কার্যকলাপ। যখন তখন বিদ্যুত না থাকার কারনে নেশাখোরদের অভয়াশ্রম হয়ে গেছে গৌরীপুরের অন্ধকার রাতের  অলি-গলি।
স্থানীয় বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ থেকে জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুত ছাড়াই প্রতিদিন পিক আওয়ারে কাশিগঞ্জ,শম্ভুগঞ্জ এলাকা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, হালুয়াঘাট, ও ফুলপুর উপজেলায় বিদ্যুত চাহিদা রয়েছে কম পক্ষে ২০ মেগাওয়াট। পিকআওয়ার ছাড়া দিনের বেলায় বিদ্যুৎ চাহিদা হচ্ছে ১৬ মেগাওয়াট। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকলেও ময়মনসিংহ জেলা গ্রীড থেকে উল্লেখিত ৪ উপজেলার জন্য প্রতিদিন সমহারে সর্বমোট বিদ্যুতের বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে মাত্র ১২ থেকে ১৪ মেগাওয়াট। এক্ষেত্রে  চাহিদার তুলনায় ৮/৯ মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছে প্রতিনিয়ত। তাছাড়া এলাকায় বরাদ্দের চেয়ে একটু বিদ্যুতের লোড বেশী হলেই লিমিটেড করা স্থাপিত সার্কিট পড়ে গিয়ে লোডশেডিং’র নামে যখন-তখন বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে এলাকাগুলোতে চরম জনভোগান্তির সৃষ্টি করছে। এ ব্যপারে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী  বিদ্যুতের  উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় এমপি সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ ক্যাপ্টেন (অবঃ) মজিবুর রহমান ফকিরের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন